জীবন ও জীবিকার সন্ধানে

বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯

বি এন পি মহাসচিব লিস্ট যারা অবদান রেখেছে দলের দুঃসময়ে

বি এন পি মহাসচিব লিস্ট বা নামের তালিকা ।

আসুন জেনে নেই বি এন পি মহাসচিব লিস্ট বা নামের তালিকা যারা অবদান রেখেছে দলের সুসময়ে এবং দুঃসময়ে
  1. ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী
  2. কর্নেল (অব) মোস্তাফিজুর রহমান
  3. কে এম ওবায়দুর রহমান
  4. ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার
  5. আবদুল মান্নান ভুঁইয়া
  6. খন্দকার দেলোয়ার হোসেন
  7. মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বি এন পি মহাসচিব
বি এন পি মহাসচিব

আসুন জেনে নেই বি এন পি মহাসচিবরা কে কোথায় ছিলেন এবং বর্তমানে কোথায় আছেন

আমরা সবাই জানি যে, মেজর জিয়া কর্তৃক ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বি এন পি ) গঠিত হয়।১৯৭৫ এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বহুদলীয় গণত্রন্ত্র মন্ত্র নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বি এন পি ) গঠিত হয়। সেই থেকে হালনাগাদ সময় পর্যন্ত সাতজন বি এন পি মহাসচিব পদে আসীন হয়েছেন । বহুদলীয় গণত্রন্ত্র মন্ত্রের আড়ালে মেজর জিয়া এ দেশে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিকে পুনর্জীবিত করেছিলেন , যা মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থী ও স্পষ্ট ভাবে ৭২'রের সংবিধান লঙগণের সামিল। যাইহোক, এই বিষয়ে অন্যত্র আলোচনা হবে । এবার আলোচনায় ফিরে আসি-

ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী

প্রতিষ্ঠা লগ্নে এই দলের মহাসচিবের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয় ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর উপর। যিনি পরবর্তীতে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আনুকূল্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন কিন্তু দলের সাথে মতবিরোধ হওয়ায় এক বছরের কম সময়ের ব্যাবধানে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। সে বিদায় সুখকর ছিলনা । এর আগে তিনি মেজর জিয়ার শাসনামলে উপ-মন্ত্রী এবং পরবর্তীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীসহ আরো অনেক গুরুত্ব পূর্ণ পদে আসীন হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিয়ার মাজারে ফুল না দেওয়ার অপরাধে উনাকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এবং পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। বর্তমানে তিনি বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি। উনার দলের প্রতীক বা মার্কা হলো - কুলা।


কর্নেল (অব) মোস্তাফিজুর রহমান

তিনি হলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বি এন পি )এর ২য় মহাসচিব। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত কর্নেল (অব) মোস্তাফিজুর রহমান (বি এন পি )এর মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ১৯৫২ সালে তিনি ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৭৩ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে আসীন হওয়ার পর সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি প্রথমে জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে বাগেরহাট-২ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট সাত্তার সাহেবের মন্ত্রীসভার বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি পরলোকগত। ১৯৯৬ সালের ৩০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।

কে এম ওবায়দুর রহমান

তিনি ছিলেন বি এন পি'র তৃতীয় মহাসচিব । কে এম ওবায়দুর রহমান ফরিদপুরের সন্তান । তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম , এ পাস করেন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালীন তিনি একবার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও দু'বার ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৬২ - ৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন । ১৯৬৪ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ৭০ এর নির্বাচনে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন । মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন । বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রী সভায় তিনি ডাক ও তার প্রতিমন্ত্রী ছিলেন । জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান নিহিত হয়ার পর তিনি খোন্দকার মুশতাকের সরকারে যোগ দেন । বিশেষভাবে উল্লেখ্য থাকে যে, তিনি জেল হত্যা মামলার অন্যতম আসামী ছিলেন । ২০০৪ সালে তিনি জেল হত্যা মামলা থেকে খালাস পান , তখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল বি এন পি'র নেতৃতাধীন চারদলীয় জোট সরকার । তিনি ১৯৭৮ সালে বি এন পি'তে যোগ দেন এবং ১৯৮৬ - ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি বি এন পি'র মহাসচিব ছিলেন । এরশাদের সামরিক সরকারে চাপে তিনি জনতা দল নামে একটি দল গঠন করে চাকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন । ২১শে মার্চ ২০০৭ সালে তিনি মারা যান। তার কন্যা শামা ওবায়েদ বি এন পি'র রাজনীতির সাথে জড়িত।

ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার

তিনি ছিলেন বি এন পি'র চতুর্থ মহাসচিব । ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার জামালপুরের সন্তান । তার বাবা জনাব রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার জামালপুর জেলার মধ্যে একজন দানশীল ও ধার্মীক ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি আইনজীবী হিসেবে পেশাদারী জীবন শুরু করলেও পরে বি এন পি'র রাজনীতির সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। ১৯৯৯ সালের ২২শে আগস্ট তিনি চিকিৎসার উদেশ্যে বিদেশে যাবার সময় বিমান বন্দরে মারা যান ।

আবদুল মান্নান ভুঁইয়া

তিনি ছিলেন বি এন পি'র পঞ্চম মহাসচিব । আবদুল মান্নান ভুঁইয়া ছিলেন বাম রাজনীতির পরিচিত মুখ । তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী এবং নেতা ছিলেন । পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের ( মেনন ) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এই আবদুল মান্নান ভুঁইয়া । ছাত্র জীবন শেষে তিনি মাওলানা ভাষানীর ন্যাপে যোগ দেন । ১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমানের অনুরোধে তিনি বি এন পি তে যোগ দেন । ১৯৯৬ সালের ২৬ জুন খালেদা জিয়া তাকে বি এন পি মহাসচিব মনোনীত করেন । তিনি টানা ১১ বছর বি এন পি মহাসচিব ছিলেন । মাইনাস টু ফর্মূলার অন্যতম রুপকার হিসেবে তার নাম ছড়িয়ে পড়লে খালেদা জিয়া তাকে দল থেক বহিস্কার করে খন্দকার দেলোয়ার হোসেন কে মহাসচিব মনোনীত করেন ।

খন্দকার দেলোয়ার হোসেন

তিনি ছিলেন ষষ্ঠ বি এন পি মহাসচিব । তিনি ছিলেন মাওলানা ভাষানীর ন্যাপের সক্রিয় কর্মী । ১৯৭৮ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের জাগদলে যোগ দিয়ে দল পরিবর্তন করেন । ২০০৭ সালে তিনি বি এন পি'র মহাসচিব হন । ২০১১ সালের ১৬ মার্চ তিনি মারা যান ।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

তিনি বি এন পি'র বর্তমান মহাসচিব । ছাত্র জীবনে তিনি বাম রাজনীতি করতেন । অধ্যাপনা দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করলেও বাবার অনুরোধে তিনি পূনরায় রাজনীতিতে ফিরে আসেন । ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ তিনি মহাসচিব নির্বাচিত হন কিন্তু আর আগেই তিনি ১৬ মার্চ ২০১১ থেকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর



1 টি মন্তব্য:

ভদ্রতা ও শালীনতার সহিত মতামত দিন