আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগ কি? আমাদের নবী ( বিশ্ব নবী ) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্মের পূর্বের ও ঈসা (আঃ) এর মৃত্যুর পরের সময়টাকে পণ্ডিত মহাশয়েরা আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগ মানে অন্ধকারাছন্ন বা কুসংস্কারাছন্ন যুগ নামে অবিহিত করেছেন | কারণ হিসেবে তাঁরা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছেন - ১* মেয়েদেরকে জীবন্ত অবস্থায় মাটির গর্তে পুতে ফেলা | ২* প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকা | ৩* সুদ কে সামাজিক ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া | ৪* মদ সহ সকল নেশা জাতীয় দ্রব্য কে স্বাস্থ্যকর দ্রব্যর মতই একত্রে গ্রহণ করা এবং আরও অনেক অসামাজিক বিষয় কে তৎকালীন মানুষেরা সামাজিক ভাবেই গ্রহণ করত |
আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের মানুষ আল্লাহ বা সৃষ্টি কর্তাকে মানতনা একথা ঠিক নয়, সে সময়ে মানুষ দেবদেবীর পূজার মাধ্যমে আল্লার কাছে তাঁদের দাবী - দাওয়া পাঠাত । এই বিষয়ে আল্লাহ পাক কুরআনে বলেন-" তারা বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করত এই ভেবে যে, এই দেবদেবী গুলো আল্লহর কাছে তাঁদের হয়ে সুপারিশ করবে এবং তাদের দুনিয়াবী বিভিন্ন স্বার্থ হাসিলে সহায়ক হবে ( ইউনুসঃ১৮) " এই থেকে প্রমাণ হয় যে তৎকালীন আরবরা সৃষ্টি কর্তা কে মানত ।
তৎকালীন আরবরা সামাজিক ভাবে অনেক খারাপ অবস্থায় ছিল , তাদের মনে - মায়া-মমতা , ভ্রাতৃত্ববোধ , সহানুভূতি এবং পাপ-পূন্যবোধ ছিলনা । তারা যে কোন খারাপ কাজ করে প্রকাশ্য প্রচার করতে গর্ববোধ করত । তারা যেকোন তুচ্ছ ঘঠনাকে কেন্দ্র করে মাসের পর মসা যুদ্ধ চালাত । মানুষ হত্যা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার । তারা যুদ্ধের পরে মৃত ব্যাক্তির লাশের নাক , কান গলা কেট বিকৃত করে উল্লাস করত ।
আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগে মেয়েদেরকে জীবন্ত অবস্থায় মাটির গর্তে পুতে ফেলত আর আধুনিক বিশ্ব কি করে
এখন আসুন আধুনিক যুগে কি হয় হালকা -পাতলা আলোকপাত করি- ১* আমরা জানি স্বামী - স্ত্রীর মধুর মিলনের মাধ্যমেই সন্তান এই পৃথিবীর আলো দেখে ( যদি আল্লাহ তাদের কপালে সন্তান ভাগ্য দিয়ে থাকেন তবে ! ) | আজকাল এই স্বামীরা সন্তান না নেওয়ার জন্য কনডম ব্যবহার করেন | যারা কনডম ব্যবহার করেন না তাদের স্ত্রীরা পিল ( মায়া বড়ি ) খেয়ে থাকেন সন্তান গর্ভে না আসার জন্য | তাঁরা কত বড় হতভাগা যারা জানতেই পারলনা মহান আল্লাহ তাদের কপালে সন্তান লাভের সুভাগ্য দিয়েছেকিনা ? অবশ্য তারা ব্যতীত যারা বিয়ের আগেই দৈহিক মিলনে লিপ্ত হয়েছে ( নাওযুবিল্লা ) | যদি কোন কারনে বা আল্লাহর কুদরতে তাদের ( স্বামী - স্ত্রীর ) গ্রহণ করা পদ্ধতি মিস্টেক করে সন্তান গর্ভে এসে যায় তাহলে পাকিস্তানি ট্যাবলেট খেয়ে গর্ভপাত করান ( বাংলাদেশীরা ) |
এর পরও যদি সন্তান গর্ভে বেচে যায় তখন তার ( সন্তানের ) পিতা - মাতারা হাসপাতালে গিয়ে অস্রপচারের মাধ্যমে গর্ভপাত করান , যে পদ্ধতি কে আধুনিক বিশ্ব বলে Abortion | এই পদ্ধতিতে সন্তান হত্যা সামাজিক এমন কি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত | ক্লিনিক গুলো রমরমা ব্যবসা করে মানব হত্যা করে |আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগে শুধু মাত্র কন্যা সন্তান হত্যা করা হত আর আধুনিক যুগে পত্র - কন্যা উভয় কে হত্যা করা হচ্ছে ? এই যুগের নাম কি হতে পারে একটু বলবেন কি ?
আধুনিকবিশ্বে ব্যভিচার কিভাবে হয়
এবার আসা যাক ব্যভিচার প্রশ্নে | অপরাধ বিশেষজ্ঞ বা মনোবিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে যত মার্ডার হয় তার বেশির ভাগের কারন হলো ব্যভিচার | এই ব্যভিচারের কারনে বেশি হত্যা হয় এশিয়া মহাদেশে কারন ইউরোপ - আমেরিকায় ব্যভিচারের নাম হলো - Live Together | ইউরোপ - আমেরিকানরা বিয়ে না করেই সহবাস করতে পারে ;সন্তান জন্ম দিতে পারে এমনকি মারতেও পারে সকলের মত | এশিয়াতে এ সুবিধা নেই তাই ব্যভিচার করে ধরা পরলে কানাঘুষা হয় , হাতাহাতি হয় , মারামারি হয় এমনকি মার্ডার হয় | এর ফলে আদালত পাড়ার বাসিন্দারা বেশ কালো টাকা হাতিয়ে সাদা করতে পারেন | কারন অবৈধ বড়লোকের বখাটে ছেলেরাই হত্যা ও ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকে তাই সমাজ সুবিচার পাইনা | সুবিচার আজ কাল টাকার ব্যগে বন্দি |
আমেরিকান সেনারা দল বেঁধে ভিয়েতনামের নারীদের ধর্ষণ করেছে , পাকিস্তানী সেনারা বাঙ্গালী নারীদের ধর্ষণ করেছে গণহারে , মায়ানমারের সেনা ও সাধারন পাবলিক মিলে গণহারে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও পাশবিক অত্যাচার করতেছে | আমাদের দেশে ব্যভিচার করে ধরা পরলে তার (ব্যভিচারীর) অভিভাবকরা প্রায়শঃ বলেন " বয়সের চুরি সবাই করে " | তাহলে ব্যভিচার কি আমাদের দেশে সামাজিক ভাবে স্বীকৃত নয় ? | অবাধ ব্যভিচারের নাম আপনি কি দিবেন একটু জানাবেন প্লিজ
|
কিভাবে আপনি সুদ খান জানেন কি ?
সুদ নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা তবু একটুখানি অবতারণা করব |
যতই হোন মুল্লা - মুন্সী , পাদ্রী -পুরোহিত সুদ আপনাকে ভক্ষণ করিতেই হইবে |আধুনিক দুনিয়া সুদের দুনিয়া | আপনি না চাইলেও আপনাকে সুদ নিতে হবে ; দিতে হবে | আমরা এখন সরল অঙ্কে পরিণত হয়েছি - বন্ধনীর কাজ শেষ না করে যোগ - বিয়োগ করতে পারবনা এই দুনিয়াকে আমরা আধুনিক বিশ্ব বলি ! কত মহান ব্যক্তি এই পৃথিবীতে আছেন , কত ধর্ম আর কত শত ধর্ম গুরু , আছে কত সহস্র বিদ্যালয় - মহাবিদ্যালয় আর বিশ্ববিদ্যালয় আরও আছে অজস্র মসজিদ মন্দির গির্জা - তবু এই বিশ্ব আজ স্টেফিন হকিং এর কৃষ্ণ গ্রহে হারিয়ে গেছে |
আজকের আধুনিক বিশ্ব আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের চাইতে খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে ।
আমি এই যুগের নাম দিলাম - কৃষ্ণকাল |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ভদ্রতা ও শালীনতার সহিত মতামত দিন