কাদিয়ানী কাফের !
কাদিয়ানী ফেরকার যাত্রা শুরু হয় ২৩ মার্চ ১৮৮৯ সালে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গুরুদাস জেলার কাদিয়ান নামক গ্রামে । এর ঠিক দু'বছর পরে ১৮৯১ সালে শেখ মুহাম্মদ হোসেন বাটালভী সাহেবের উদ্যেগে ৭২ ফেরকার আলেম-উলামা সর্বসম্মত হয়ে হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ( আঃ ) এবং তাঁর অনুসারীদের কাফের ও জাহান্নামী ফতোয়া দান করেন । সেই থেকে অধ্যবধি কাদিয়ানী কাফের শব্দটা আস্টে-পৃস্টে লেগে আছে তাঁদের ওপর । পৃথিবীর যে প্রান্তেই ঐ ৭২ ফেরকার মানুষেরা সুযোগ পায় , সেই প্রান্তেই কাদিয়ানী সম্প্রদায় এর ওপর চালানো হয় শারীরিক, মানষিক ও আর্থিক অত্যাচার , অবিচার ও নির্যাতন ; তবু তাঁদের প্রচার প্রচারণা থেমে নেই । প্রতি বছর বিভিন্ন ধর্মের লক্ষ লক্ষ মানুষ এই অত্যাচার , অবিচার ও নির্যাতন দেখেও কাদিয়ানী হচ্ছে । কি আছে সে আহমদীয়া মুসলিম জামাতে যে তাঁরা এই ১০০ বছরে পুরো পৃথবী দখল করে ফেলল - একবিন্দু রক্ত না ঝড়িয়ে ? । অনেকেই বলে থাকেন যে কাদীয়ানী সম্প্রদায় এর লোকজন যাদু জানে । তারা যাদু দিয়ে সহজ সরল মানুষ কে ভুলিয়ে বালিয়ে কাদিয়ানী সম্প্রদায় এর অন্তর্ভুক্ত করে ফেলে । তারা যে যাদু জানে সে যাদুর মূলমন্ত্র হচ্ছে - অহিংসা ।
কাদিয়ানী সম্প্রদায় এর স্লোগান
"Love for all hatred for none" যার বাংলা অর্থ হচ্ছে- "ভালোবাসা সবার তরে, ঘৃণা নয় কারো পরে"
আপনি বিশ্বাস করুণ আর নাই করুণ ২০৬ টা দেশ তাঁরা জয় করেছে এক বিন্দু রক্ত না ঝরিয়ে । কাদিয়ানী কাফির'রা এই পর্যন্ত যত মসজিদ নির্মাণ করেছে তার বেশির ভাগই দখল করে নিয়েছে শিয়া - সুন্নীরা । কাদিয়ানীরা তাঁদের বেদখল হওয়া মসজিদ ফিরে পাবার জন্য আইনী লড়াই করেছে কিন্তু নিজেদের হাতে অস্র তুলে নেয়নি । কেন তাঁরা অস্র তুলে নেয়নি ? কারণ তাঁরা যার হাতে বয়াত নিয়ে কাদিয়ানী ( আহমদী ) হয়েছে তার আদেশ হচ্ছে - " জিহাদ নিষেদ" আর এই কারনেই কাদিয়ানীরা জ্বালাও-পোড়াও, মারামারি এবং দখলবাজীতে পুঠো হতে পারেনি । তাঁদের নীতি হচ্ছে, কেউ তোমাকে শালা বললে ; তুমি তাকে ভাই বলবে- আজ অথবা কাল অথবা একদিন না একদিন সে তোমাকে ভাই বলবেই । কাদিয়ানীরা ভালোবাসা দিয়ে বিশ্ব জয় করেছে ; ঘৃণা বা অস্রের ভয় দেখিয়ে নয় । আফ্রিকার কয়েকটা দেশ আছে , যাদের সংসদের প্রতিনিধিত্ব কারীদের বেশির ভাগ এই - কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের । আসুন এখন জানি, বাটালভী সাহেব যখন কাদীয়ানী কাফের ফতোয়া দিলেন , তখন আহমদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আঃ) কি বলেছেন-
আমি কাফের নই এবং মুরতাদও নই । পরিতাপ! আপনারা ঐশী রহস্যকে বুঝতে পারেন নি । আপনারা হতবুদ্ধি হয়ে গেছেন । আপনাদের সন্দেহ সীমা ছাড়িয়ে গেছে আর আপনারা আমাকে কাফের আখ্যায়িত করেছেন । আমি আপনাদের যা বলেছি এর এক দশমাংশও আপনারা উপলব্ধি করতে পারেন নাই । আপনারা আসলে একটি ত্বরাপরায়ণ জাতি । আল্লাহর কসম ! আমি স্বতন্ত্র নবুওয়তের দাবী করি নি আর উম্মতের গন্ডির বাইরেও যাই নি বরং আমি খাতামান নবীঈনের কল্যাণধারা থেকে সর্গ্বীয় সুধা পান করেছি। আল্লাহ , ফিরিশতা , কিতাব ও রসূলগণের প্রতি আমি বিশ্বাস রাখি এবং আমি ক্বিবলামূখী হয়ে নামায পড়ি । অতএব আপনারা কেন আমাকে কাফের আখ্যায়িত করেছেন ? আপনারা কি বিশ্ব প্রভু-প্রতিপাল্পককে ভয় করেন না ? -হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আঃ) সিররুল খিলাফা ১১৫ নম্বর পৃষ্ঠা
কে মুসলমান ?
বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ ) মুসলমানের পরিচয় দিয়েছেন এই ভাবে - হযরত আনাস বিন মালেক রাঃ হতে বর্নিত । তিনি বলেন , রাসূল সাঃ এরশাদ করেছেন - যে ব্যাক্তি আমাদের মত নামায পড়ে , আমাদের কিবলাকেই কিবলা নির্ধারণ করে, এবং আমাদের জবাইকৃত পশুর মাংস খায় , সে মুসলমান ।
সহীহ বুখারী / হাদীস নং ৩৮৪
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাঃ থেকে বর্নিত । নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিমরা নিরাপদ , সে-ই প্রকৃত মুসলিম । আর যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে, সে-ই প্রকৃত হিজরতকারী । [ হাদিসটি ইমাম বুখারী বর্ণনা করেছেন ]
এখন আপনার ওপর দায়িত্বভার দিলাম- যারা মহান সৃষ্টিকর্তাকে আল্লাহ বলে , ক্বিবলামূখী হয়ে নামায পড়ে , কুরআনে বর্ণীত সকল কিছুতে বিশ্বাস স্থাপন করে , কুরআনের আয়াততো দূরে থাক একটি অক্ষর বা সামান্যতম পরিবর্তন কে কুফুরী মনে করে, সকল সাহাবাকে সম্মান করে তাদেরকে আপনি কি বলবেন? কাদিয়ানী কাফের নাকি আহমদী মুসলিম ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ভদ্রতা ও শালীনতার সহিত মতামত দিন